প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
নৌ-প্রটোকল চুক্তি ও ট্রানজিট এজেন্ডাকে সামনে রেখে আগামি ৫ মে ঢাকায় আসছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সফরের সূচি ও তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধ্বশত জন্মবার্ষিকীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে থাকবেন প্রণব মুখার্জি। তবে সফরকালে দ্বিপাক্ষিক সব বিষয়ে ভারতের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে। তার সফরের পরই আমি নয়াদিল্লী সফরে যাবো।’’
ভারতের অর্থমন্ত্রী এমন এক সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন, যখন নয়া দিল্লি ঢাকাকে দীর্ঘমেয়াদি নৌ-প্রটোকল চুক্তি ও নিয়মিত ট্রানজিট শুরুর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।
ট্রানজিট চালুর জন্য যে কাঠামোগত চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট) করা হবে, তার খসড়াও চূড়ান্ত করেছে সরকার। কাঠামোগত চুক্তির খসড়ায়, বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটান স্বাক্ষর করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারত চায় পাঁচ বছর বা তারও চেয়ে বেশি মেয়াদের জন্য নৌ-প্রটোকল চুক্তি নবায়ন করতে। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বাংলাদেশের স্বার্থ পূরণে সহায়ক হবে না বলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
অন্যদিকে নিয়মিত ট্রানজিট শুরু এবং নতুন রুট চালুর জন্য নয়া দিল্লি ঢাকাকে অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশ এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায় আসবেন দিল্লির আন্তরিকতার বার্তা নিয়ে। গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সফরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়ার প্রভাব পুরো সফরের ওপরই পড়েছিল।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানায়, ভারত তার প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে যে আন্তরিক, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আসন্ন সফরে এ বিষয়টিই দিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হতে পারে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সফরের কয়েক মাস আগে থেকেই নৌ-প্রটোকল চুক্তি নবায়ন ও ট্রানজিট চুক্তির আওতায় নিয়মিত ট্রান্সশিপমেন্ট চালুর তাগিদ দিয়েছে ভারত। গত ২০ নভেম্বর এ বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশন অফিস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।
এ ছাড়া নৌ-ট্রানজিটের মাধ্যমে শেরপুর ও আশুগঞ্জে আসা ভারতীয় পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলায় অবস্থিত সুতারকান্দি স্থলবন্দর ব্যবহারের সুযোগ চেয়েছে ভারত। নদীবন্দর থেকে স্থলবন্দর পর্যন্ত পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবহার করা হবে। ভারতীয় এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে সরকার।
২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের পর ওই বছরেরই ৭ আগস্ট ঢাকায় এসেছিলেন প্রণব মুখার্জি। সেদিন ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু প্রকল্প অনুমোদন-সংক্রান্ত জটিলতায় গত ১৮ মাসে ওই ঋণের কোনো অর্থই ছাড় করা হয়নি।
প্রণবের আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করার তাগিদ দিতে পারে।
No comments:
Post a Comment