Tuesday, April 17, 2012

সাঈদীর তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি অব্যাহত


মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাই সাঈদীর তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জবানবন্দি ছয় দিনের মতো শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছয় দিনের
মতো জবানবন্দি শেষ করেন।

পরে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা জব্দকরা বিভিন্ন ডকুমেন্ট প্রদর্শনী এবং আলমত উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন তার জবানবন্দিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনী এবং শান্তিবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন অপকর্মে বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, “যুদ্ধের সময় এ বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর খুন, গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের অত্যাচার, নির্যাতন চালায়।”

এ সময় হেলালউদ্দিন এটিএন বাংলা কর্তৃক নির্মিত ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নামে প্রামাণ্য চিত্র জব্দ করে তা ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলেন। ট্রাইব্যুনালে প্রামাণ্য চিত্রটি প্রর্দশন করা হয়।

প্রদর্শনীতে ১৯৪৭ সাল থেকে পাক-ভারত বিভক্তির ইতিহাস, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা আন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনসহ ৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতের গণহত্যা, মৃতদেহ, কঙ্কাল, ও ধর্ষিতাদের ছবি সংবলিত ইতিহাস প্রদর্শিত হয়।

 ‍মুজিবনগর সরকার গঠনের শপথ অনুষ্ঠান, পাকিস্তানের জেল থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পর  বাংলাদেশে এসে তার দেয়া ভাষণ, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্থনসহ স্বাধীনতার পর বাঙালিদের বিজয় উল্লাস প্রদর্শন করা হয়।

প্রদর্শনী শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা তার জবানবন্দিতে বলেন, “১৯৭১ সালের মে মাসে মাওলানা একেএম ইউসুফের নেতৃত্বে ৭৬ জন লোক খুলনার আনসার ক্যাম্পে প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠন করেন। পরে আগস্ট মাসে সরকারি এক অধ্যাদেশে ওই রাজাকার বাহিনীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করা হয়।”

এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলেন, “মাওলানা ইউসুফ রাজাকার বাহিনীর নামকরণ করেন। রাজাকার বাহিনী এবং শান্তি কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন বিভিন্ন মাদ্রাসার মুহাদ্দেস এবং মুদ্দাসের। তারা ঠান্ডা মাথায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাক সেনাদের সঙ্গে মিলে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।”

এছাড়াও বিভিন্ন রেডিও টেলিভিশন প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্থির চিত্র  ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।

No comments:

Post a Comment