সাংবাদিক
দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা পুলিশের
উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম ও তদন্তকারী কর্মকর্তা রবিউল আলমকে কাল বুধবার আদালতে
হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলার এফআইআর ও ১৬১ ধারার জবানবন্দিসহ
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রও নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। আজ
বিচারপতি এ
এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত
হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আজ তদন্তের অগ্রগতি-সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে তুলে ধরা হয় এবং এর ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আলতাফ হোসেন।
আদালত থেকে বের হয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, শুনানিকালে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তদন্তের ফলাফল শূন্য।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটি স্পর্শকাতর মামলা। আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে কাল হাজির হতে বলেছেন। এফআইআর ও ১৬১ ধারায় জবানবন্দিসহ তাঁদেরকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিবিড়ভাবে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা হচ্ছে, যাতে জঘন্য হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পার না পায়।
তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে: তদন্ত কর্মকর্তা রবিউল আলম স্বাক্ষরিত তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবদিক থেকে অপরাধ কর্ম করার বিষয়ে লক্ষ্য রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত হচ্ছে—সংঘবদ্ধ পেশাদার কোনো গোষ্ঠী ডাকাতি করতে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কি না এবং নিহত দুজনের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বা পেশাগত কোনো প্রতিপক্ষ দ্বারা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কি না। এ উদ্দেশে ঘটনাস্থল, বাড়িটির দারোয়ান, কেয়ারটেকার, পরিচারিকা ও পরিচারক, অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা, বাড়ির মালিক, আগন্তুক, সম্ভাব্য অতিথি, ঘটনাস্থলের আশপাশের ব্যক্তি, সাগর-রুনির কর্মস্থলের সহকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বন্ধু, সম্ভাব্য শত্রুপক্ষ সবাইকে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
গুপ্তচর নিয়োগের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে: প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাদীর পরবর্তী সম্পূরক অভিযোগের বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। পেশাদার অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ করে জড়িত থাকার ব্যাপারে সাক্ষ্য ও তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে গুপ্তচর নিয়োগের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অপরাধ উদঘাটনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আসামি গ্রেপ্তারসহ মামলার রহস্য উদঘাটনের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতের কোনো একসময় রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন তাঁদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই হত্যার কারণ উদঘাটনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ রিট আবেদন করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি ও অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন।
No comments:
Post a Comment