প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
ঢাকা, ৩১ মার্চ: রাজধানীর আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হয়েছে। মার্চ মাসে পৃথক ঘটনায় ২১ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে চাঞ্চল্যকর
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আসামি গ্রেফতার তো দূরের কথা মোটিভও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অপরাধ না কমাতে পারলেও সাধারণ মানুষের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংসদ সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রসহ বাদ যায়নি কেউই। এ মাসে বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা। বরাবরে মতই পুলিশ ’হচ্ছে-হবে’ তত্ত্ব দিচ্ছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আসামি গ্রেফতার তো দূরের কথা মোটিভও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অপরাধ না কমাতে পারলেও সাধারণ মানুষের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংসদ সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রসহ বাদ যায়নি কেউই। এ মাসে বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা। বরাবরে মতই পুলিশ ’হচ্ছে-হবে’ তত্ত্ব দিচ্ছে।
২৮ মার্চ মিরপুর দারুস সালাম এলাকায় সিফাত আলি তন্ময় নামের সাত বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। মুক্তিপণের জন্য তাকে হত্যা করে লাশ পলিথিনে ঢুকিয়ে খাটের নিচে রেখে দেয়া হয়।
২৭ মার্চ পল্লবী বালুর মাঠ থেকে শেখ রাসেল নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতে যাত্রাবাড়িতে গৃহবধূ আফসানুর খাতুনকে দুর্বৃত্তরা নিজ বাসায় ঢুকে হত্যা করে। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রায় একই সময় ডেমরায় ডগালাই এলাকায় মঞ্জু নামে এক যুবক ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন করা হয়।
২৫ মার্চ পল্লবীতে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক যুবক সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন। একইদিন মিরপুর শাহআলীতে পুলিশের গুলিতে মাসুদ নামে এক পরিবহন শ্রমিক নিহত হন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না; তবে পুলিশের দাবি সে সন্ত্রাসী।
২৩ মার্চ কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ফরিদ নামে পরিবহন ড্রাইভার খুন হন। ১৫ মার্চ বাড্ডার আশরাফনগর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সবুজবাগের রাজারবাগ পুকুর থেকে ফজলে রাবিব নামে এক কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়।
১৪ মার্চ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে গার্মেন্টস শ্রমিক সুমি আক্তারকে দিনদুপুরে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
১০ মার্চ দক্ষিণখানে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে ১৪ বছরের শিশু শাওন বেপারীকে হত্যা করা হয়। ওইদিন লালবাগে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সানি আলি নামে এক যুবকও খুন হয়।
৯ মার্চ যাত্রাবাড়ির দনিয়া পোস্ট অফিস গলিতে এক ব্যক্তির ৮ টুকরো মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত মাথা উদ্ধার ও পরিচয় উদঘটন করতে পারেনি পুলিশ।
৬ মার্চ সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলি খুন হন। ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হলেও এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি।
আইন শৃংখলা বাহিনীর হিসাব থেকে এ সব তথ্য জানা গেছে। এছাড়াও গত জানুয়ারি মাসে রাজধানীতে ১৯ জন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ জন খুন হন। এ নিয়ে গত ৩ মাসে ৫৯ জন খুন হয়েছে। চলতি মাসে এই সংখ্যা বেড়েছে।
মার্চ মাসে পর্যন্ত রাজধানীর গুলশান, মহাখালী, নিউমার্কেট,নীলক্ষেত, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পৃথক একাধিক ছাত্র সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্র সংঘর্ষের সময় রাস্তা অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুরসহ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম বেড়েছে। প্রতিদিন অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে পড়ে ২/৩ জন শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছে। এ সময় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১০জনকে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
এ দিকে গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা আবার ফিরে এসে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আধিপত্য বিস্তারের কারণে অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে। এছাড়াও চাঁদাবাজি, ঝুট ব্যবসা ও পুলিশের নিচের স্তরের সদস্যদের অবৈধ টাকা আয়ের ঝোঁকের কারণে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
No comments:
Post a Comment