Thursday, April 12, 2012

অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঐক্যবদ্ধ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের ফসল : সুরঞ্জিতের দাবি



রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনাকে 'ঐক্যবদ্ধ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের ফসল' দাবি করে বলেছেন, 'রেলকে যারা ধ্বংস করতে চায়, রেলের উন্নতি যারা চায় না, তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুকের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকালে রেলভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এসব কথা বলেন। অর্থ কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে
পদত্যাগ করবেন কিনা-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমার জন্য পদ অর্জন সাংঘাতিক কোনো বিষয় নয়, ত্যাগ করাও সহজ। যদি অবস্থান ওদিকে নিয়ে যায়, এক মুহূর্ত সময় নেব না।' ফারুকের কাছে টাকা পাওয়ার ঘটনায় বিরোধী দল বিচার বিভাগীয় তদন্তের যে দাবি করেছে- সে প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত বলেন, 'এটা রেল মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়, আদালতের বিষয়।' এপিএস ফারুক ঘুষের টাকা দিতে মন্ত্রীর (সুরঞ্জিত) কাছেই যাচ্ছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দাবি করেন, 'তিনি রাত ১০টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর বাসায় রাত ১২টার মধ্যে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।' রেলমন্ত্রী বলেন, 'এপিএসের বাসা মোহাম্মদপুরে, টাকা ওদিকে যাচ্ছিল। তার পরও সত্য বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে হাইকোর্ট বা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করতে পারে।
এদিকে, রেলমন্ত্রীর গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনায় গঠিত দু'টি তদন্ত কমিটি আজ ফের পুনর্গঠন করা হয়েছে। রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটিতে রেলের মহাপরিচালক আবু তাহেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হককেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। রেল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শশী কুমার সিংহ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি আরো জানান, ইউসুফ আলীকে আগামী রোববার তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এনামুল হককেও চিঠি দেয়া হবে। সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এই তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না? জবাবে তিনি বলেন, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও কমান্ড্যান্টের বক্তব্য পাওয়ার পর প্রয়োজন হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হবে।

অন্যদিকে, রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদারের বিষয়ে তদন্ত করবেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) আখতারুজ্জামান। ১৫ এপ্রিল বেলা ১১টার মধ্যে এ বিষয়ে হাজিরা দেয়ার জন্য তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত সোমবার রাতে ৭০ লাখ টাকাসহ আটক হন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার। এ সময় তার সঙ্গে আটক হন রেলওয়ের জিএম (পূর্বাঞ্চল) ইউসুফ আলী মৃধা। সোমবার রাত ১১টার পর তাদেরকে ঘুষের ৭০ লাখ টাকাসহ কৌশলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে ধরিয়ে দেন ড্রাইভার আলী আজম। বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে রাতভর পিলখানায় আটকে রাখে। পরদিন মঙ্গলবার সকালে পরিচয় নিশ্চিত করে এবং তদবির পেয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। মিডিয়ার মাধ্যমে বুধবার খবরটি দেশের সর্বত্র পৌঁছে যায়। রেলমন্ত্রীর এপিএস এতো টাকা কোথায় পেলেন-এ নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। 

No comments:

Post a Comment