ভারতের প্রতিশ্রুতি স্বত্ত্বেও আবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, শুধু প্রতিশ্রুতি আর বক্তব্য না দিয়ে সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্য
চাওয়ারও পরমার্শ তাদের।
শনিবার
ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পারচৌকা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী
বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। নিহত ফারুক হোসেন শিবগঞ্জ
উপজেলার পারচৌকা গ্রামের জসিম উদ্দীনের ছেলে। ফারুক হোসেন গরু ব্যবসার সাথে জড়িত। শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার
দিকে পারচৌকা সীমান্তের ১৭৫ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার-সংলগ্ন এলাকা দিয়ে
ভারত থেকে গরু নিয়ে আসছিলেন ফারুক। সীমান্তের ভারতীয় অংশের ৫০০গজ ভেতরে বিএসএফের
সবদেলপুর ক্যাম্পের জওয়ানরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় , এতে ঘটনাস্থলেই ফারুকের
মৃত্যু হয়। তার লাশ বিএসএফের জিম্মায় রয়েছে। ইতোমধ্যে ফারুকের লাশ ফেরত চেয়ে
বিএসএফকে চিঠি দিয়েছে বিজিবি। তবে বিএসএফ জানিয়েছে তাদের প্রক্রিয়া শেষে লাশ ফেরত
দেবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ
৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
বাংলাদেশ-ভারত
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর পরিচালক নুর খান বলেন, প্রাণহানি ঘটে এমন অস্ত্র সীমান্ত এলাকায় ব্যবহার করা হবে না- ভারত বার বার
এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও হত্যা বন্ধ হয়নি। সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা চলছেই, বাংলাদেশ
সরকারও ভারতের প্রতিশ্রুতির কথাই বার বার দেশবাসীকে জানিয়েছে। কিন্তু অমীমাংসিত
এসব বিষয় যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হয় তাহলে তৃতীয় দেশ বা জাতিসংঘের
হস্তক্ষেপ চাওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। নুর খান আরও বলেন, প্রতিশ্রুতি
দেয়া হচ্ছে কিন্তু এ নিয়ে কোন বাস্তব কর্মপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না। এমন কোন
কার্যক্রম সরকার নিচ্ছে না যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় ও প্রক্রিয়ায় সীমান্তে হত্যা
বন্ধ করা যাবে। এ অবস্থায়, শুধু বক্তব্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে
সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে দুদেশকে এগুতে হবে। যদি তাতে সমস্যার সমাধান না হয়
তাহলে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
তবে
এখনও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন নুর খান। তিনি বলেন,
সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দুদেশই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে
সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা সম্ভব।
No comments:
Post a Comment