Wednesday, April 18, 2012

সপ্তম দিনের মতো জবানবন্দি শেষ করলেন সাঈদীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা


201109211316584878sayeed20110921113756.jpg (300×200)মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাই সাঈদীর তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জবানবন্দি সপ্তম দিনের মতো শেষ হয়েছে। বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন
সদস্যের ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের সপ্তম দিনের মতো জবানবন্দি শেষ করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন তার জবানবন্দিতে বলেন, বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, রেডিও টেলিভিশন ও ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সংগৃহিত তথ্য উপাত্তের ওপর নিবিড়ভাবে তদন্ত করি। তদন্তকালে প্রত্যেকটি ঘটনাস্থল থেকে স্থির চিত্র নিজস্ব ক্যামেরায় ধারণ করি।

হেলালউদ্দিন তার জবানবন্দিতে একুশে টিভির একুশের চোখ অনুষ্ঠানে প্রচারিত একটি ডকুমেন্ট আদালতে উপস্থাপন করেন। পরে তা ট্রাইব্যুনালে প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রর্দশন করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গোপন ও প্রকাশ্য তদন্তে প্রমাণিত হয়, যে আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ওরফে দেলু ওরফে দেইল্লা পিতা ইউসুফ শিকদার পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী থানার সাউথখালী গ্রামের বাসীন্দা।

এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা হেলালউদ্দিন ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর দাখিল, আলিমের সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ছারছিনা মাদ্রাসা থেকে ১৯৫৭ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে এবং ১৯৫৯ সালে আলিম পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়।

জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা সাঈদীর বিভিন্ন অপরাধের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ মে পিরোজপুর সদর থানার মাছিমপুর গ্রামে বাসস্টান্ডের পিছনে ২০ জন নিরহ লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ওই একই দিনে মাছিমপুর হিন্দু পাড়ায় লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ করে ১৩ জন হিন্দুকে গুলি করে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ৭ মে পিরোজপুর পাড়েরহাট বাজারে ৩০ থেকে ৩৫টি দোকান ও বাড়িতে লুন্ঠন চালায়। এ সময় একটি দোকান থেকে ২২ শের সোনা লুট করা হয়।

১৯৭১ সালের ৮ মে দুপুর ১টা ৩০মিনিটে পিরোজপুর সদর থানার বাদুরা গ্রামে শহিদুল ইসলাম সেলিমের বাড়িতে লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

হেলাল উদ্দিন বলেন, ওই একই দিন বিকাল তিনটার দিকে চিথলিয়া গ্রামের মানিক পসারির বাড়িতে লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ করে। এবং ওই বাড়ি থেকে ইব্রাহিম কুট্টি এবং মফিজ উদ্দিন পসারিকে ধরে নিয়ে পাড়েরহাট বন্দরে ব্রিজের কাছে ইব্রাহিম কুট্টিকে গুলি করে হত্যা এবং মফিজ উদ্দিন পসারিকে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

এছাড়াও ৭১ সালে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী থানার বিভিন্ন গ্রামে মানুষ হত্যা, বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ, নারী ধর্ষণ, লুটপাট এবং হিন্দু ধর্মের লোকদের ধর্মান্তরিত করাসহ ২৩ অভিযোগের বর্ণনা দেন এবং ঘটনার স্থানসহ বিভিন্ন জায়গার স্থির এবং ভিডিও চিত্র প্রর্দশন করেন।

পরে ট্রাইব্যুনাল তার জবানবন্দি অসমাপ্ত অবস্থায় মামলার কার্যক্রম বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন।

No comments:

Post a Comment