বিবিসি-রিপোর্টঃ রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক সহকারীর গাড়িতে
সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনায় তাঁর পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তার সহকারী এবং রেলওয়ের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে, তাই এখানে
তার নিজের পদত্যাগের কোন প্রশ্ন ওঠেনা।
ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু তদন্তে বাঁধা তৈরি
হতে পারে কিনা-- এ প্রশ্নে মিঃ সেনগুপ্ত বলেন, ঘটনার বিষয়ে এমনকি
বিচার বিভাগীয় তদন্ত হলেও তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
মন্ত্রী জানান, তদন্তের জন্য সংসদীয় একটি সাব-কমিটি গঠিত হয়েছে। "দুর্নীতি দমন
কমিশন তদন্ত করতে চাইছে,
এমনকি আদালতও যদি সুয়োমোটো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলেও আমি এবং আমার মন্ত্রণালয় পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।"
গত সোমবার রাতে রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর
ফারুক তালুকদারকে বহনকারী একটি গাড়ি থেকে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর
থেকে বাংলাদেশে তা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল চলছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে অভিযোগ করা হয়েছে, রেলওয়ের নিয়োগের জন্য ঘুষ হিসেবে ঐ টাকা নেয়া হয়েছিল।
মন্ত্রী
অবশ্য প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ কড়া ভাষায় অস্বীকার করে আসছেন।
ষড়যন্ত্র দেখছেন
মন্ত্রী
বিবিসির বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে মিঃ
সেনগুপ্ত পুরো বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখেছেন।
"ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত হয়েছে। গত কয়মাসে আমি রেলকে মানুষের কাছে নিতে অনেক উন্নতি
করেছি ...অসৎ আমলা যেমন রয়েছে,
তেমনি রয়েছে দুর্নীতিবাজ কনট্রাক্টর...সেই সাথে
যোগ দিয়েছে সাম্প্রদায়িক শক্তি।"
বিরোধী দল বিএনপির নেতারা ইতিমধ্যেই
রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতাও
দুদিন আগে মন্তব্য করেছেন,
"রেল ভবনকে যেন হাওয়া ভবন বানানো না
হয়।"
ষড়যন্ত্র বলে যে সন্দেহ তিনি করছেন সে
প্রসঙ্গে মন্ত্রী তাঁর এপিএসের গাড়ির চালকের বিজিবি (বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ)
সদরদপ্তরে গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন।
"বিজিবির সদর দপ্তর একটি সুরক্ষিত এলাকা, রাত দশটার সময় কি
করে গাড়ি সেখানে ঢুকতে পারলো?
কি করে সারারাত তারা বিজিবির হেফাজতে থাকলো? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর মিলতে হবে।"
ড্রাইভার লাপাত্তা?
ওদিকে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের
সহকারি ওমর ফারুকের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের বিতর্কের
কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি রয়েছেন,
সেই মাইক্রোবাসের চালক আলী আজমের অবস্থান সম্পর্কে
কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
গত সোমবার গভীর রাতে বিপুল অঙ্কের টাকাসহ রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের
এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার,
রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর
ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হক মাইক্রোবাস যোগে মন্ত্রীর জিগাতলার বাসায়
যাচ্ছিলেন।
এ সময় ওমর ফারুকের গাড়িচালক আলী আজম
আকস্মিকভাবে গাড়িটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির সদর দপ্তর পিলখানায় ঢুকিয়ে
দিয়ে গাড়িতে অবৈধ টাকা আছে বলে শোরগোল শুরু করেন। এরপর বিজিবির সদস্যরা টাকাসহ
সবাইকে আটক করেন।
পরদিন সকালে গাড়িচালক আলী আজমকে রেখে
পিলখানা থেকে বাকিদের ছেড়ে দেয় বিজিবি । কিন্তু এরপর থেকে আলী আজমের কোনো খোঁজ
পাওয়া যাচ্ছেনা।
ড্রাইভার আলী আজমের বিষয়ে রেলওয়ের
মহাপরিচালক আবু তাহের বিবিসিকে বলেন,
একজনের ব্যক্তিগত ড্রাইভারের খোজ তার জানার কথা
নয়। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু হলে তিনি বিষয়গুলো দেখবেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
মনিরুজ্জামান বলেন এই ঘটনায় তাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। তিনি বলেন, আলি আজমকে পাওয়া যাচ্ছে না এই মর্মে কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে তারা
ব্যবস্থা নেবেন।
No comments:
Post a Comment