Friday, April 13, 2012

চালক আজমের পিতা বললেন, আমার ছেলে যেন গুম না হয়ে যায়


আমরা জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমার ছেলে কোথায় আছে এখনও জানতে পারলাম না। তাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। সে কোন অন্যায় করেনি। ঘুষের টাকা সে ধরিয়ে দিয়ে বরং ভাল কাজ করেছে। আমার ছেলে যেন গুম না হয়ে যায়। এসব কথা বলছিলেন রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুকের গাড়িচালক আজম খানের পিতা দুদ মিয়া খান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখায় চাকরি করতেন। ১৯৯৯ সালে অবসর নিয়েছেন তিনি। এখন গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে থাকেন। গতকাল বিকালে মতলব
দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের উত্তর নওগাঁও গ্রামের খান বাড়িতে গিয়ে কথা হয় আজমের বৃদ্ধ পিতা-মাতা ও ভাই-বোনের সঙ্গে। 
গত সোমবার গভীর রাতে টাকার বস্তাসহ বিজিবি’র হাতে আটক হন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত’র এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার, রেলওয়ের জিএম ইউসুফ মৃধা ও কমান্ড্যান্ট এনামুল হক। ওমর ফারুকের গাড়িচালক আজম খান অবৈধ টাকা বহন করতে অপরাগতা প্রকাশ করে বিজিবি কার্যালয়ে ঢুকে যান। তবে ঘটনার পর আজমের খোঁজ মিলছে না। আজমের পিতা দুদ মিয়া খান বলেন, মন্ত্রীর টাকার বস্তা ধরা পড়ার খবর টিভিতে দেখেছি। 
আমার ছেলে কোন অন্যায় কাজ করেনি। সে ভাল কাজ করেছে। তিনি বলেন, আমি আগে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করতাম, তখন আজম ড্রাইভারি শিখছিল। ৪-৫ বছর আগে সে ট্যাক্সি চালাত। মাঝখানে কিছুদিন এক ব্যবসায়ীর প্রাইভেট গাড়ি চালিয়েছে। ২ বছর ধরে এপিএস সাহেবের গাড়ি চালাচ্ছিল। তিনি বলেন, সে ঢাকার জিয়া উদ্যানের কাছে একটা ঘর ভাড়া করে থাকতো। তবে তার ওই বাসায় আমি কখনও যাইনি। আমার অন্য ছেলে-মেয়েরাও কোন দিন তার বাসায় যায়নি। তিনি বলেন, বছরখানেক আগে আজম অসুখে পড়ে। তখন আমরা বাড়ি থেকে টাকা পাঠিয়েছিলাম। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে আজম চতুর্থ। তার অপর ভাইদের মধ্যে শাহ আলম খান মতলব বাজারে ব্যবসা করেন। দুই ভাই কাইয়ুম খান ও কামাল খান এলাকায় কৃষি কাজ করেন। আরেক ভাই সোহেল খান সৌদি প্রবাসী। আজমের দু’বোনের মধ্যে সালমা খান স্বামী-সন্তান নিয়ে সৌদিতে বসবাস করছেন। তার বড় বোন নাজমা খান বলেন, ২ বছর ধরে আজম ঢাকায় গাড়ি চালকের চাকরি করছে। চাকরি নেয়ার পর থেকে সে আর বাড়িতে আসেনি। নিখোঁজ আজমের বৃদ্ধ মা মাজেদা বেগম বলেন, আমরা আমাদের ছেলেকে ফিরে চাই। আমার ছেলের নিরাপত্তা চাই। ঘটনার সঙ্গে যদি আমার ছেলে জড়িত থাকে তার বিচার করা হোক। কিন্তু আমার ছেলে যেন গুম হয়ে না যায়। আজমের চাচা বিল্লাল হোসেন খান বলেন, আজম খান তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে ঢাকার জিয়া উদ্যান এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে বলে শুনেছি।  ৭ বছর আগে আজম একই গ্রামের আবুল খায়ের মৃধার মেয়ে স্বপ্নাকে বিয়ে করেন। আজমের বন্ধু আবদুল জলিল বলেন, অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র হিসেবে আজম এলাকায় বেশ পরিচিত। আজমের বিষয়টি তার পরিবার ও এলাকার লোকজন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারে বলে জানান তিনি।  

No comments:

Post a Comment